দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপে প্রাপ্তি সামান্যই
১২ নভেম্বর ২০২৩ ০২:১০ মিনিট

প্রত্যাশার বেলুনে হাওয়া ঢুকেছিল অনেক দিক থেকেই। বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে সুপার লিগের পারফরম্যান্স স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বিশ্বকাপেও ভালো কিছুর। সাকিব আল হাসান এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে বলেছিলেন, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হবে ভয়ংকর দল। বিজ্ঞাপনেও তাই নানাভাবে বাংলাদেশের কাল্পনিক সাফল্যের উল্লাসের উদযাপন। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা। বিশ্বকাপটা দুঃস্বপ্নের মতোই কাটল বাংলাদেশের। প্রায় মাস দেড়েকের দীর্ঘ যাত্রায় প্রাপ্তি সামান্যই। ডলার সংকটের এই যুগে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলে ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার নিয়ে আসছে। বিশ্বকাপ থেকে এরচেয়ে বড় কোনো প্রাপ্তি খুব সম্ভবত নেই বাংলাদেশের। জয়ের জন্য ম্যাচপ্রতি ৪০ হাজার ডলার পুরস্কার আইসিসির আর গ্রুপ পর্ব শেষে ছিটকে যাওয়া ৬ দলের জন্য আছে ১ লাখ ডলার। এভাবেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর বাইরে নেই কোনো মনে রাখার মতো পারফরম্যান্স, না আছে কোনো নতুন তারকার উত্থানের আভাস। বরং অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন আর বিতর্ক নিয়েই বিশ্বকাপ শেষ হলো বাংলাদেশের, খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল শেষ হলেই বোধহয় তারা হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ৯টি ম্যাচই শেষ হয়েছে সম্পূর্ণভাবে, কোনোটিতেই ছিল না প্রাকৃতিক কোনো বিঘ্ন। লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ এই ৫ ক্রিকেটার খেলেছেন সবগুলো ম্যাচেই। লিটন-তামিম নিয়মিতই ইনিংসের সূচনা করেছেন। মাত্র দুটো ম্যাচে এই দুজনে মিলে ভালো একটা শুরু এনে দিতে পেরেছেন, সেটাও বিশ্বকাপের মানদন্ডে খুবই অকিঞ্চিৎ। তামিম-লিটনের সর্বোচ্চ জুটিটা ৯৩ রানের, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি ৭৬ রানের। এছাড়া বাকি ৭ ম্যাচের কোনোটিতেই উদ্বোধনী জুটি থেকে ৫০ রানও পায়নি বাংলাদেশ। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানও সুবিধের নয়। লিটনের রান ৯ ইনিংসে ২৮৪, দুটি হাফসেঞ্চুরি আর একখানা শূন্য। সর্বোচ্চ ইনিংস ৭৬ রানের। তামিমের ৯ ইনিংসে রান ১৪৫, একটাই হাফসেঞ্চুরি। ৫১ রান করেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। ২০১৯ বিশ্বকাপেও অষ্টম হয়েছিল বাংলাদেশ, এবারেও তাই। সেবার তাও ইংলিশ কন্ডিশনে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার তো আফগানিস্তান আর ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা। হারের ব্যবধানও বিশাল। ২০১৯ সালে সাকিব ব্যাটে-বলে ছিলেন অতিমানবীয়, করেছিলেন ৬০৬ রান আর নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম তাই এই বিশ্বকাপে প্রাপ্তির কিছুই দেখেন না বাংলাদেশের। আফগানদের বিশ্বমঞ্চে নিজেদের মেলে ধরা, রাচিন রবীন্দ্রর মতো তরুণের উত্থান কিংবা কুইন্টন ডি ককের মতো পরিসমাপ্তি; কিছুই পায়নি বাংলাদেশ।