বাংলাদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা
১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৩:১৯ মিনিট
বাংলাদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের মেগা প্রজেক্টগুলো দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের চাবিকাঠি। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মেগা প্রজেক্টের গুরুত্ব:
দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: মেগা প্রজেক্টগুলো দেশের অর্থনীতিতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পায়।
দারিদ্র্য বিমোচন: মেগা প্রজেক্টগুলো দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস পায়।
জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: মেগা প্রজেক্টগুলো জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সাহায্য করে। বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
অবকাঠামো উন্নয়ন: মেগা প্রজেক্টগুলো দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বন্দর, শিল্প-কারখানা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামো উন্নত হয়।
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কিছু মেগা প্রজেক্ট:
পদ্মা বহুমুখী সেতু: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর: দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
ঢাকা মেট্রোরেল: ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কর্ণফুলী টানেল: চট্টগ্রাম শহরের যানজট সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রকল্পের কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মেগা প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলি হলো:
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি: দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি: দেশের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার জন্য।
দারিদ্র্য বিমোচন: দেশের দারিদ্র্য হ্রাস করার জন্য।
অবকাঠামো উন্নয়ন: দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সাহায্য করার জন্য।
জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য।
মেগা প্রকল্পের পদক্ষেপগুলি হলো:
বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন: দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
শিল্প-কারখানা স্থাপন: দেশের বিভিন্ন স্থানে শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন: শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি
মুদ্রাস্ফীতি হলো একটি অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যেখানে পণ্য ও সেবার দাম দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে না।উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি হলো যখন মুদ্রাস্ফীতির হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। সাধারণত যখন মুদ্রাস্ফীতির হার ১০% এর বেশি হয় তখন তাকে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণ হলো:
অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি: যখন সরকার অতিরিক্ত টাকা ছাপায়, তখন বাজারে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।
খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি: খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেলে অন্যান্য পণ্য ও সেবার দামও বৃদ্ধি পায়।
উৎপাদনশীলতা হ্রাস: যখন উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়, তখন পণ্যের সরবরাহ কমে যায় এবং এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি: যখন আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন তা দেশীয় বাজারেও প্রভাব ফেলে।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব হলো:
ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস: মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।
জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে না: মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে না।
দারিদ্র্য বৃদ্ধি: মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত: মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হলো একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকটে থাকা অন্য দেশের মুদ্রার মজুত। এই মুদ্রা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্প্রতি হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৩ সালের আগস্টে এর পরিমাণ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ হ্রাস পেয়ে ৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের কারণ হলো:
আমদানি বৃদ্ধি: বাংলাদেশের আমদানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বেরিয়ে যাচ্ছে।
রেমিট্যান্স হ্রাস: প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে দেশে আসা বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশকে জ্বালানি তেল আমদানিতে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ডলারের দাম বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশকে ডলার কিনতে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের প্রভাব হলো:
টাকার মূল্য হ্রাস: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেলে টাকার মূল্য হ্রাস পায়।
আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি: টাকার মূল্য হ্রাস পেলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পায়।
মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি: আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত: মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
বাংলাদেশের ঋণের বোঝা বৃদ্ধিঃ
বাংলাদেশের ঋণের বোঝা গত কয়েক বছর ধরে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে দেশের মোট বহিঃঋণের পরিমাণ ছিল ১৩৭ বিলিয়ন ডলার। এটি দেশের জিডিপির ৪১%।
বাংলাদেশের ঋণের বোঝা বৃদ্ধির কারণ হলো:
উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ: বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ঋণ নেওয়া হচ্ছে। বাজেট ঘাটতি: বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করার জন্য ঋণ নেওয়া হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশকে জ্বালানি তেল আমদানিতে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশকে ডলার কিনতে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশের ঋণের বোঝা বৃদ্ধির প্রভাব হলো:
সুদের বোঝা বৃদ্ধি: ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুদের বোঝাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হ্রাস: ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হ্রাস পাচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর বোঝা: ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।
বাজেট ঘাটতিঃ
বাজেট ঘাটতি হলো যখন একটি সরকারের মোট ব্যয় তার মোট আয়ের চেয়ে বেশি হয়। এটি একটি অর্থনৈতিক সমস্যা কারণ এটি ঋণের বোঝা বৃদ্ধি করে এবং অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি গত কয়েক বছর ধরে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে দেশের মোট বাজেট ঘাটতি ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি দেশের জিডিপির ৫.৪%।
বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধির কারণ হলো:
উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ: বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া: করোনা মহামারীর কারণে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। ব্যয় বৃদ্ধি: সরকারের বেতন-ভাতা, ভর্তুকি এবং অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই পদক্ষেপ গুলি হলো:
রাজস্ব আয় বৃদ্ধি: সরকার কর বৃদ্ধি এবং কর আদায় ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
ব্যয় হ্রাস: সরকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস করার চেষ্টা করছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি: সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
বেকারত্বঃ
বেকারত্ব বলতে বোঝায় এমন অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি কাজের জন্য উপযুক্ত এবং কাজ খুঁজছে কিন্তু কাজ পাচ্ছে না। বেকারত্ব একটি বড় সমস্যা কারণ এটি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং দারিদ্র্য বৃদ্ধি করতে পারে। বাংলাদেশের বেকারত্বের হার বর্তমানে প্রায় ৪.৬৭%। এটি মানে যে দেশের শ্রমশক্তির প্রায় ৪.৬৭% ব্যক্তি বেকার।
বাংলাদেশের বেকারত্বের কারণ হলো:
জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি: বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে কাজের বাজারের অমিল: বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কাজের বাজারের চাহিদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এর ফলে অনেক শিক্ষিত যুবক কাজ পাচ্ছে না।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অভাব: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার পর্যাপ্ত নয়। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।
অবকাঠামোগত ঘাটতি
অবকাঠামোগত ঘাটতি বলতে বোঝায় এমন একটি অবস্থা যেখানে কোন দেশের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা যেমন সড়ক, রেলপথ, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা তার জনসংখ্যার চাহিদা পূরণ করতে পারে না। অবকাঠামোগত ঘাটতি একটি বড় সমস্যা কারণ এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে। বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। দেশের সড়ক, রেলপথ, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা জনসংখ্যার চাহিদা পূরণ করতে পারে না। এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস পাচ্ছে।
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত ঘাটতির কারণ হলো:
অর্থের অভাব: বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত হলেও, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের অভাব রয়েছে।
দুর্নীতি: দুর্নীতির কারণে অবকাঠামো প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার হয় না। এর ফলে অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হয়।
জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি: বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত ঘাটতি দূর করার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই পদক্ষেপ গুলি হলো: অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধি:
সরকার অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে।
দুর্নীতি দূর করণ: সরকার দুর্নীতি দূর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ: সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
বিদ্যুৎ সংকটঃ
বাংলাদেশে বর্তমানে একটি গুরুতর বিদ্যুৎ সংকট বিরাজমান। এই সংকটের কারণ হলো:
জ্বালানি সংকট: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান জ্বালানি হলো প্রাকৃতিক গ্যাস। কিন্তু দেশের গ্যাসের উৎপাদন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি: বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুতের চাহিদা ও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার অভাব: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ সংকটের ফলে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে:
লোডশেডিং: বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ না করতে পারার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং হচ্ছে। এর ফলে জনগণের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাহত: বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে অর্থনীতিতে ক্ষতি হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ব্যাঘাত: বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু প্রধান প্রভাব হলো:
তাপমাত্রা বৃদ্ধি: বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি, এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস হচ্ছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি: সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় এলাকা বন্যার ঝুঁকিতে পড়ছে। এছাড়াও লবণাক্ত পানি কৃষি জমির ক্ষতি করছে।
চরম আবহাওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, এবং অন্যান্য চরম আবহাওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঘটনাগুলো মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর ব্যাপক ক্ষতি করছে।
জীববৈচিত্র্য হ্রাস: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়ছে। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বের সব দেশেই অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলো এই প্রভাবের কাছে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের অভিযোজনের ক্ষমতা কম।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্ব নেতারা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর হওয়া এর মধ্যে একটি। এই চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব নেতারা গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।