বাংলাদেশ একটি আশ্চর্যজনক গল্প

News Depend Desk

প্রতিনিধিঃ ডেস্ক রিপোর্ট

৩১ জানুয়ারী ২০২৪ ০৩:৪১ মিনিট


পোস্ট ফটো

বাংলাদেশ একটি আশ্চর্যজনক গল্প। মাত্র ৫০ বছরের ইতিহাসের মধ্যে, এই দেশটি একটি দরিদ্র ও অস্থিতিশীল দেশ থেকে একটি দ্রুত বর্ধনশীল ও স্থিতিশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এই অসামান্য অগ্রগতি বাংলাদেশের জনগণের অধ্যবসায়, সংগ্রাম, এবং দেশপ্রেমের ফল।


বাংলাদেশের ইতিহাস

বাংলাদেশের ইতিহাস চার হাজার বছরেরও বেশি সময়ের। এই সময়ে, দেশটি বিভিন্ন হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম এবং ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল।

প্রাচীন ইতিহাস

বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে শুরু হয়। এই সময়ে, দেশটিতে বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মৌর্য, গুপ্ত, পাল এবং সেন সাম্রাজ্য। এই সময়ে, বাংলার সংস্কৃতি ও সভ্যতা সমৃদ্ধি লাভ করে।

মধ্যযুগ

বাংলাদেশের মধ্যযুগ শুরু হয় খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে। এই সময়ে, দেশটিতে মুসলিম শাসনের সূচনা হয়। মুসলিম শাসনের অধীনে, বাংলার সংস্কৃতি ইসলামী প্রভাবের অধীনে আসে। এই সময়ে, বাংলায় অনেক বিখ্যাত মসজিদ, মাদ্রাসা এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা নির্মিত হয়।

ব্রিটিশ শাসন

বাংলাদেশের ব্রিটিশ শাসন শুরু হয় ১৭৫৭ সালে। এই সময়ে, দেশটি ব্রিটিশ ভারতের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ শাসনের অধীনে, বাংলার অর্থনীতি ও সমাজ ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এই সময়ে, বাংলার সংস্কৃতিতেও ব্রিটিশ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও স্বাধীনতা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৭১ সালে। এই যুদ্ধে, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানি শাসন থেকে মুক্তি পেতে লড়াই করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। 

স্বাধীনতা পরবর্তী যুগ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী যুগ শুরু হয় ১৯৭১ সালে। এই যুগে, দেশটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। এই সময়ে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি একটি প্রাণবন্ত ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি দেশকে বিশ্বের বুকে অনন্য করে তুলেছে।


বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং তার ফলাফল

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা বাঙালিদের উপর ব্যাপক গণহত্যা চালায়, যার ফলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়।


স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের দুটি অংশ ছিল: পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান ছিল জনসংখ্যার ৫৬% হলেও এর রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল খুবই কম। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের উপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য চালায়। এছাড়াও, পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবাদকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা গুরুত্ব দেয় না। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথকে সুগম করে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে রাজি হয় না। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়।


স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ৩টার দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করে। এই গণহত্যার শিকার হয় সাধারণ মানুষ, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ। গণহত্যার পর পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী গঠন করে তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করে। ভারতের সহায়তায় মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকায় আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।


স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে বিশ্বের মানচিত্রে একটি নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয় এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। কিন্তু এই যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।


স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ।

বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে নতুন যুগের সূচনা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি গৌরবময় অধ্যায়। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে। এই যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া। স্বাধীনতার পর থেকে, বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে কৃষিভিত্তিক থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও,

অর্থনৈতিক উন্নয়ন

বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হল কৃষি। স্বাধীনতার পর থেকে, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও, শিল্প উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশ এখন একটি উৎপাদনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন হল:

মাথাপিছু আয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।

দারিদ্র্যের হার হ্রাস। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

শিল্প উৎপাদনের বৃদ্ধি।

বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার।


সামাজিক উন্নয়ন

বাংলাদেশের সামাজিক ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন, শিশু উন্নয়ন, পরিবেশ ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন হল:

সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি।

শিশু মৃত্যুহার হ্রাস।

মাতৃমৃত্যুহার হ্রাস।

নারীর ক্ষমতায়ন।

শিশুদের অধিকার নিশ্চিতকরণ।

পরিবেশ সংরক্ষণ।

মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।


বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের পথে এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

দারিদ্র্যের হার হ্রাস।

বৈষম্য দূরীকরণ।

কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা।

বাংলাদেশ সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় কাজ করছে। সরকারের লক্ষ্য হল ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা।


বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ: ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করবে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন হবে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন: ২০২২ সালে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন। পদ্মা সেতুর ফলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।

মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নতি: বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন ও শিশু উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।


বাংলাদেশের সামনে এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দারিদ্র্য: বাংলাদেশে এখনও অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। দারিদ্র্য হ্রাস করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বৈষম্য: বাংলাদেশে এখনও বৈষম্য একটি বড় সমস্যা। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য, নারী-পুরুষের বৈষম্য এবং সামাজিক বৈষম্য দূর করা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।

কর্মসংস্থান: বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের জন্য একটি বড় হুমকি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত এক দশক ধরে ক্রমবর্ধমান। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.০৩ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণগুলো হল:

পোশাক শিল্পের বিকাশ: বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক। এই শিল্পের বিকাশ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

রেমিট্যান্সের প্রবাহ: বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃষি খাতের উন্নয়ন: বাংলাদেশের কৃষি খাত দেশের অর্থনীতির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। কৃষি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নতি করা সম্ভব।


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া দরকার: দক্ষ জনশক্তির বিকাশ:

দক্ষ জনশক্তির বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই করা সম্ভব।

অবকাঠামোগত উন্নয়ন: অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা সম্ভব।

প্রতিযোগিতামূলক বাজার: প্রতিযোগিতামূলক বাজারের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই করা সম্ভব।


.বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া। স্বাধীনতার পর থেকে, বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন, শিশু উন্নয়ন, পরিবেশ ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।

শিক্ষা

বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার অবদান সবচেয়ে বেশি। স্বাধীনতার পর থেকে, বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার ক্রমবর্ধমান। ২০২২ সালে বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার ৭২.৯%। এছাড়াও, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি হার ৯৮% এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি হার ৮৭%।

স্বাস্থ্য

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থারও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে, শিশু মৃত্যুহার এবং মাতৃমৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২২ সালে শিশু মৃত্যুহার ১১ জন প্রতি ১,০০০ জন এবং মাতৃমৃত্যুহার ১৭৩ জন প্রতি ১,০০,০০০ জন।

নারী উন্নয়ন

বাংলাদেশে নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে, নারীর শিক্ষার হার, কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায় অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের নারীর সাক্ষরতার হার ৬২.২%। এছাড়াও, কর্মজীবী নারীর হার ৩৩%।

শিশু উন্নয়ন

বাংলাদেশে শিশু উন্নয়নের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে, শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের শিশু মৃত্যুহার ১১ জন প্রতি ১,০০০ জন। এছাড়াও, স্কুলগামী শিশুর হার ৯৪%।

মানবাধিকার

বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে, গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, এবং মানবাধিকারের সুরক্ষায় সরকার কাজ করছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সূচক ৬.২। এছাড়াও, মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় কাজ করছে। সরকারের লক্ষ্য হল ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা।


প্রাথমিক শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষা বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক। এটি ৬ বছর মেয়াদী। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষা, দক্ষতা এবং মূল্যবোধ অর্জন করা। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ধরনের বিদ্যালয় রয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়গুলো বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করে।

মাধ্যমিক শিক্ষা

মাধ্যমিক শিক্ষা ৫ বছর মেয়াদী। এটি ২ বছর মেয়াদী জুনিয়র স্কুল এবং ৩ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক স্কুলে বিভক্ত। মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা এবং মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো। মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ধরনের বিদ্যালয় রয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়গুলো বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করে।

উচ্চশিক্ষা

উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তর। এটি ৩ বছর থেকে ৫ বছর মেয়াদী। উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং ইনস্টিটিউট রয়েছে।


শিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: শিক্ষার মান: বাংলাদেশের শিক্ষার মান এখনও সন্তোষজনক নয়।

শিক্ষার ব্যয়: উচ্চশিক্ষার ব্যয় এখনও অনেকের পক্ষে সাশ্রয়ী নয়।

শিক্ষায় বৈষম্য: বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখনও বৈষম্য রয়েছে।

শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে।

শিক্ষার ব্যয় কমাতে সরকারি স্কুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শিক্ষায় বৈষম্য দূর করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।




Link copied