বাংলাদেশের অর্থনীতি: ২০২৩-২৪ সালের সম্ভাবনা

News Depend Desk

প্রতিনিধিঃ ডেস্ক রিপোর্ট

০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৪০ মিনিট


পোস্ট ফটো

বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২২-২৩ সালে ৭.২% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ছিল ২০০৯-১০ সালের পর সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। ২০২৩-২৪ সালে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৭.৫% হতে পারে। এক্ষেত্রে রপ্তানি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রপ্তানি: বাংলাদেশের রপ্তানি ২০২২-২৩ সালে ৩৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে রপ্তানি ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক, চামড়া ও পাট রপ্তানি বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিনিয়োগ: বাংলাদেশে বিনিয়োগ ২০২২-২৩ সালে ১০.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে বিনিয়োগ ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কর্মসংস্থান: বাংলাদেশে কর্মসংস্থান ২০২২-২৩ সালে ৮.৬ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে কর্মসংস্থান ৯ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে রপ্তানি শিল্প, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আরো বিস্তারিত: রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি।

২০২২-২৩ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩-২৪ সালে এটি ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি চামড়া ও পাট রপ্তানিও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতি। সরকার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কর ছাড়, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও আমদানি সহজতর করা। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল রপ্তানি শিল্পের সম্প্রসারণ। রপ্তানি শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি। এছাড়াও, নির্মাণ ও সেবা খাতেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ: বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা থাকলেও কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব। মুদ্রাস্ফীতি: বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ২০২২-২৩ সালে ৬.২৯% ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে মুদ্রাস্ফীতি ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। বেকারত্ব: বাংলাদেশের বেকারত্ব ২০২২-২৩ সালে ৬.৬% ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে বেকারত্ব ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে। বেকারত্বের কারণে মানুষের আয় কমে যায় এবং সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি। ২০২২-২৩ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩-২৪ সালে এটি ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি চামড়া ও পাট রপ্তানিও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা: তৈরি পোশাক রপ্তানির সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মান ও দাম বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক। এছাড়াও, বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্নত ও কর্মজীবী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি।

এসব কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। চামড়া রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা: চামড়া রপ্তানির সম্ভাবনাও বেশ ভালো। বিশ্ববাজারে চামড়ার চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, জুতা, ব্যাগ ও অন্যান্য চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশ চামড়া উৎপাদনে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশের চামড়ার মান ও দাম বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক। এছাড়াও, বাংলাদেশের চামড়া শিল্পে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কারণে চামড়া রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। পাট রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা: পাট রপ্তানির সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে।

বাংলাদেশ পাট উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের মান ও দাম বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক। এছাড়াও, বাংলাদেশের পাট শিল্পে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কারণে পাট রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য করণীয়: বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে: তৈরি পোশাক, চামড়া ও পাট শিল্পে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। রপ্তানি পণ্যের মান ও গুণগতমান উন্নত করা। রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর করা। রপ্তানি পণ্যের জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করা। রপ্তানিকারকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশ ভালো। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শ্রমবাজারের সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি কারণে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সরকারি বিনিয়োগের তুলনায় বেসরকারি বিনিয়োগের হার অনেক বেশি। ২০২২-২৩ সালে বেসরকারি বিনিয়োগ ৮.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে এটি ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য করণীয়: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে: বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা। বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা। বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বাড়বে। বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাত: বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাতগুলো হল: তৈরি পোশাক চামড়া পাট কৃষি বিদ্যুৎ জ্বালানি পানি যোগাযোগ অবকাঠামো তথ্যপ্রযুক্তি।

বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশ ভালো। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। রপ্তানি শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তৈরি পোশাক, চামড়া, পাট ইত্যাদি রপ্তানি শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। নির্মাণ খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে নির্মাণ খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্র, গ্যাস পাইপলাইন ইত্যাদি নির্মাণের কাজের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।

সেবা খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা: বাংলাদেশে সেবা খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন, ব্যাংকিং, বিমা ইত্যাদি সেবা খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য করণীয়: বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে: রপ্তানি শিল্প, নির্মাণ ও সেবা খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য উদ্যোক্তা তৈরি করা। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বাড়বে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ: বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব। কারিগরি দক্ষতার অভাব। কর্মসংস্থানের পরিবেশের অভাব। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসাথে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ২০২২-২৩ সালে ৬.২৯% ছাড়িয়ে গেছে। এটি গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৩-২৪ সালে মুদ্রাস্ফীতি ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণ বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কারণগুলো হল: আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি: বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশেও মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ কারণ: দেশে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া, এবং সরবরাহ সংকটও মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সব শ্রেণির মানুষকেই বিপর্যস্ত করে।

বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। মুদ্রাস্ফীতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, যার ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। এছাড়াও, মুদ্রাস্ফীতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়, যার ফলে অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করণীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও ভূমিকা রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করণীয়গুলো হল: আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রভাব মোকাবেলা করা: সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অভ্যন্তরীণ কারণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা: জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া, এবং সরবরাহ সংকট নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বাজার মনিটরিং: সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং করা এবং অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বেসরকারি খাতের ভূমিকা বৃদ্ধি করা: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বৃদ্ধি করা জরুরি। বেসরকারি খাতকে উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করতে উৎসাহিত করা উচিত।

বাংলাদেশের বেকারত্ব একটি উদ্বেগজনক বিষয়। ২০২২-২৩ সালে দেশে বেকারত্বের হার ৬.৬% ছাড়িয়ে গেছে। এটি গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৩-২৪ সালে বেকারত্ব ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেকারত্বের কারণ বাংলাদেশে বেকারত্বের প্রধান কারণগুলো হল: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি: বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রতি বছর শ্রমবাজারে নতুন নতুন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী যোগ হচ্ছে। কিন্তু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির হার এতো দ্রুত বাড়ছে না। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব এখনও যথেষ্ট নয়। ফলে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা শেষ করেও কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছেন না। কর্মসংস্থানের পরিবেশের অভাব: বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের পরিবেশ এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়। এতে অনেক দক্ষ কর্মী চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। বেকারত্বের প্রভাব বেকারত্বের প্রভাব সব শ্রেণির মানুষকেই বিপর্যস্ত করে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি। এতে তরুণদের মধ্যে হতাশা, বিশৃঙ্খলা ও অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, বেকারত্বের কারণে অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। বেকারত্ব হ্রাসে করণীয় বেকারত্ব হ্রাসে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও ভূমিকা রয়েছে। বেকারত্ব হ্রাসে করণীয়গুলো হল: জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করা: জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করলে শ্রমবাজারে চাপ কমবে। শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বৃদ্ধি করা: শিক্ষার্থীদেরকে কারিগরি শিক্ষায় উৎসাহিত করা উচিত। কর্মসংস্থানের পরিবেশ তৈরি করা: শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা এবং কর্মসংস্থানের পরিবেশ তৈরি করা উচিত। স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি করা: বেকারদেরকে স্বনির্ভর হতে উৎসাহিত করা উচিত।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪ সালে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা জরুরি। ইতিবাচক দিক বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক দিকগুলো হল: প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য: বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এছাড়াও, দেশে প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, এবং অন্যান্য খনিজ সম্পদ রয়েছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বাজেট: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক। এটি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। বেসরকারি খাতের উৎপাদন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি: বেসরকারি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেসরকারি খাতের উৎপাদন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো হল: মুদ্রাস্ফীতি: ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ৬.২৯% ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতি ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে জনজীবনে নানা সমস্যা দেখা দেবে। বেকারত্ব: ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের বেকারত্বের হার ৬.৬% ছাড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেকারত্ব ৭% ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। করোনাভাইরাসের প্রভাব: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

করোনাভাইরাসের নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সুপারিশ বাংলাদেশের অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিম্নলিখিত সুপারিশ করা যায়: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে: সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া, এবং সরবরাহ সংকট নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং করা এবং অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বেকারত্ব হ্রাসে: সরকারের উচিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করা। শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বৃদ্ধি করা। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা এবং কর্মসংস্থানের পরিবেশ তৈরি করা। বেকারদেরকে স্বনির্ভর হতে উৎসাহিত করা। করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায়: সরকারের উচিত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা। বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে এবং চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।

Link copied